খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে ?

নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো খাদ্য শৃঙ্খল সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

www.bigyanbook.co.in
খাদ্য শৃঙ্খল


খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে ?

উত্তর: যে পদ্ধতিতে খাদ্য শক্তি উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায়ে খাদ্য ও খাদকের সম্পর্ক যুক্ত প্রাণী গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবাহিত হয়, সেই শক্তি প্রবাহের ক্রমপর্যায়কে খাদ্য শৃঙ্খল বলে।


খাদ্য শৃঙ্খল কয় প্রকারের ?

খাদ্য শৃঙ্খল তিন প্রকারের হয়।


খাদ্য শৃঙ্খলের প্রকার

প্রকৃতিতে সাধারণত তিন প্রকারের খাদ্য শৃংখল দেখা যায়। যেগুলি হল —

1) গ্রেজিং খাদ্য শৃঙ্খল বা শিকারিজীবী খাদ্য শৃঙ্খল

2) পরজীবী খাদ্য শৃঙ্খল

3) ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্য শৃঙ্খল


এবার আমরা এই খাদ্য শৃঙ্খল এর প্রকার গুলি সম্পর্কে জানবো।


1) গ্রেজিং খাদ্য শৃঙ্খল বা শিকারিজীবী খাদ্য শৃঙ্খল

এই রকম খাদ্য শৃংখল উৎপাদক থেকে শুরু হয়ে ক্রমশ প্রাথমিক খাদক, গৌণ খাদক ও প্রগৌণ খাদকে শেষ হয়। এই প্রকারের খাদ্যশৃঙ্খলে পর্যায়ক্রমে জীবের আকার ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং জীবের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে।

সবুজ উদ্ভিদ (উৎপাদক) → ঘাসফড়িং (প্রাথমিক খাদক) → ব্যাং (গৌণ খাদক) → সাপ (প্রগৌণ খাদক) → বাজপাখি (সর্বোচ্চ খাদক)


2) পরজীবী খাদ্য শৃঙ্খল

এই প্রকার খাদ্য শৃংখল উৎপাদক থেকে শুরু হয়ে পরজীবী জীবে শেষ হয়। এক্ষেত্রে খাদ্য শৃঙ্খল বৃহৎ জীব থেকে শুরু হয়ে ক্রমশ ক্ষুদ্র জীব এ শেষ হয়।

সবুজ উদ্ভিদ (উৎপাদক) → গোরু (প্রাথমিক খাদক) → গোরুর কৃমি (গৌণ খাদক)


3) ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্য শৃঙ্খল

এই রকম খাদ্য শৃংখল মৃতজীবী থেকে শুরু হয়ে বৃহৎ খাদকের শেষ হয়।

পচনশীল জৈববস্তু (ম্যানগ্ৰোভের পাতা + ব্যাকটেরিয়া) → ডেট্রিটাস কনজিউমার (পতঙ্গের লার্ভা, নিমাটোডস ইত্যাদি) → ক্ষুদ্র মাংসাশী মাছ → বৃহৎ মাংসাশী মাছ



খাদ্য শৃঙ্খল কিভাবে গঠিত হয় ? 

✔️ উৎপাদক খাদ্য উৎপাদনকালে সৌরশক্তিকে দেহে রাসায়নিক শক্তিতে (ATP অণু হিসেবে) রূপান্তরিত করে। এই রাসায়নিক শক্তি আবার খাদ্যের মধ্যে স্থিতি শক্তিরূপে আবদ্ধ হয়। 

✔️ প্রাথমিক খাদক উৎপাদকের তৈরি খাদ্য গ্রহণ করার ফলে ঐ শক্তি উৎপাদক থেকে প্রাথমিক খাদক এর দেহে স্থানান্তরিত হয়। 

✔️ গৌণ খাদক প্রাথমিক খাদক দের ভক্ষণ করে, ফলে শক্তি প্রাথমিক খাদক থেকে গৌণ খাদকে স্থানান্তরিত হয়।

✔️ প্রগৌণ খাদকরা গৌণ খাদকদের গ্রহণ করলে শক্তি গৌণ খাদকদের দেহ থেকে প্রগৌণ খাদকদের দেহে স্থানান্তরিত হয়।

এইভাবে শক্তি, উৎপাদক থেকে ক্রমশ প্রাথমিক, গৌণ, প্রগৌণ খাদকে শৃঙ্খলাকারে স্থানান্তরিত হতে থাকে এবং খাদ্য শৃঙ্খল গঠন করে।



খাদ্য শৃঙ্খলের বৈশিষ্ট্য

1) সবুজ উদ্ভিদ খাদ্য শৃঙ্খল এর প্রাথমিক ভিত্তি স্তর গঠন করে। কারণ এরাই খাদ্য শৃঙ্খল এর উৎপাদক।

2) খাদ্য ধারাবাহিকভাবে উৎপাদক থেকে শুরু হয়ে এক খাদক থেকে অন্য খাদকে পরিবাহিত হয়।

3) খাদ্য শৃংখল এর শুরু থেকে শেষের দিকে অর্থাৎ শীর্ষ পর্যায়ে জীবের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে এবং আকারে বড় হতে থাকে।

4) একই সঙ্গে অনেকগুলি খাদ্য শৃঙ্খল গঠন হতে পারে।

5) উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয় একে অপরের উপর খাদ্য শৃংখল এর দ্বারা পরস্পর সম্পর্কিত থাকে।



খাদ্য শৃঙ্খলের গুরুত্ব

1) খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত বিভিন্ন জীবের খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ভিত্তিতে তাদের পারস্পরিক আন্তক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

2) বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ পদ্ধতির উন্মোচন ঘটে।

3) বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত বিভিন্ন টক্সিক বস্তুর আবর্তন ক্রিয়া এবং বায়োম্যাগনিফিকেশনের অসুবিধা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

4) বাস্তুতন্ত্রের জীব বৈচিত্র্যের সঠিক উন্মোচন ঘটে।


• ডেট্রিটাস বা কর্কর কাকে বলে?

   জীবদেহ থেকে উৎপন্ন পরিত্যক্ত বিভিন্ন বস্তু, যেমন - পাতা, পালক, মলমূত্র ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত পচনশীল বস্তুকে ডেট্রিটাস বা কর্কর বলে।


• ফ্লোরা কাকে বলে?

  একটি নির্দিষ্ট বসতি অঞ্চলের উদ্ভিদগোষ্ঠীকে ফ্লোরা বলে।


• ফনা কাকে বলে?

  একটি নির্দিষ্ট বসতি অঞ্চলের প্রাণীগোষ্ঠীকে ফনা বলে।


• নেকটন কাকে বলে?

  যেসব প্রাণী জলে ভাসমান অবস্থায় সন্তরণে সক্ষম তাদের নেকটন বলে। উদাহরণ, চিংড়ি, মাছ ইত্যাদি।


• বেনথস কাকে বলে?

  যেসব প্রাণী জলাশয়ের তলদেশে বসবাস করে তাদের বেনথস বলে। উদাহরণ, শামুক, ঝিনুক,স্পঞ্জ, প্রবাল ইত্যাদি।


• প্ল্যাংকটন কাকে বলে?

   জলে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীবদের প্ল্যাংকটন বলে।


• ফাইটোপ্ল্যাংকটন কাকে বলে?

   উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনদের ফাইটোপ্ল্যাংকটন বলে।


• জুপ্ল্যাংকটন কাকে বলে?

   প্রাণী প্ল্যাংকটনদের জুপ্ল্যাংকটন বলে।


কেমন লাগছে বিজ্ঞানবুক পড়তে? অবশ্যই জানান কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে। আপনি কি Bigyanbook এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি ইউটিউবে গিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন বিজ্ঞানবুক এর ইউটিউব চ্যানেল। ফলো করুন বিজ্ঞানবুক -কে ফেসবুকে। শেয়ার করুন এই আর্টিকেলটি অন্যান্যদের সাথে। পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক। ধন্যবাদ।।

Share this page
Bigyanbook

লেখাটি কেমন কমেন্ট করে জানান। শেয়ার করুন এই পেজটি। পড়ুন অন্যান্য পোস্টগুলিও। youtube facebook whatsapp email

2 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post