উদ্ভিদ ও প্রাণীর পার্থক্য

Bigyanbook

উদ্ভিদ ও প্রাণীর পার্থক্য

উদ্ভিদ প্রাণী
1) কয়েক প্রকার নিম্ন শ্রেণীর উদ্ভিদ ছাড়া বেশিরভাগ উদ্ভিদ গমনে অক্ষম। 1) কয়েকটি প্রাণী ছাড়া প্রায় সব প্রাণী গমনে সক্ষম।
2) উদ্ভিদ দেহের সাধারণত নির্দিষ্ট আকার এবং আয়তন থাকে না। 2) অ্যামিবা ছাড়া প্রায় সব প্রাণীর নির্দিষ্ট আকার এবং আয়তন থাকে।
3) উদ্ভিদ দেহ সাধারণত অপ্রতিসম হয়। 3) বিশেষ কয়েকটি প্রাণী ছাড়া বেশিরভাগ প্রাণীদেহ প্রতিসম।
4) সুপারি, নারকেল, তাল, খেজুর ইত্যাদি কয়েক প্রকারের উদ্ভিদ ছাড়া প্রায় সব উদ্ভিদের শাখা প্রশাখা থাকে। 4) স্পঞ্জ, হাইড্রা ইত্যাদি কয়েক রকমের প্রাণী ছাড়া, প্রাণীদেহে শাখাহীন হয়।
5) উদ্ভিদের দেহে সাধারণত অঙ্গ বা তন্ত্র গঠিত হয়নি। 5) উচ্চতর প্রাণীদের অঙ্গ এবং তন্ত্র গঠিত হয়েছে।
6) উদ্ভিদ দেহে পরিপাকতন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র, রেচনতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ইত্যাদি থাকে না। 6) প্রাণীদেহে সাধারণত পরিপাকতন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র, রেচনতন্ত্র এবং স্নায়ুতন্ত্র থাকে।
7) উদ্ভিদ কোষে সজীব কোষ পর্দা ছাড়াও সেলুলোজ নির্মিত জড় দৃঢ় কোষপ্রাচীর থাকে। 7) প্রাণী কোষের কোনো কোষ প্রাচীর থাকে না। শুধুমাত্র সজীব কোষ পর্দা বা প্লাজমা পর্দা থাকে।
8) উদ্ভিদ কোষে সাধারণত সেন্ট্রোজোম থাকে না। 8) প্রাণী কোষে সাধারণত সেন্ট্রোজোম থাকে।
9) উদ্ভিদ কোশে ভ্যাকুওল উপস্থিত। 9) প্রাণী কোশে ভ্যাকুওল থাকে না।
10) স্বর্ণলতা, ছত্রাক ইত্যাদি কয়েক প্রকার উদ্ভিদ ছাড়া বেশিরভাগ উদ্ভিদ স্বভোজী। 10) কয়েকটি এককোশী প্রাণী ছাড়া সব প্রাণীই পরভোজী।
11) সবুজ উদ্ভিদের দেহকোশে ক্লোরোফিল থাকায় সালোকসংশ্লেষ হয়। 11) ইউগ্লিনা, ক্রাইস্যামিবা প্রভৃতি কয়েকটি প্রাণী ছাড়া প্রাণীদেহে সালোকসংশ্লেষ হয় না।
12) প্রায় সমস্ত রকমের উদ্ভিদ তরল ও গ্যাসীয় খাদ্য গ্রহণ করে। 12) পরজীবী প্রাণী ছাড়া প্রায় সকল প্রকার প্রাণী কঠিন খাদ্য গ্রহণ করে তবে প্রাণীরা তরল খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।
13) উদ্ভিদ দেহে অপাচ্য খাদ্য থাকে না। 13) পরজীবী প্রাণী ছাড়া প্রায় সকল প্রাণীর দেহে অপাচ্য খাদ্য থাকে যা প্রাণীরা বর্জ্য পদার্থ রূপে ত্যাগ করে।
14) উদ্ভিদ দেহে রেচন পদার্থ ত্যাগের জন্য বিশেষ তন্ত্র থাকে না ফলে এরা রেচন পদার্থ দেহ কোষে উপজাত পদার্থ রূপে জমা করে রাখে। (কোন কোন উদ্ভিদ পাতা বা বাকল মোচন করে রেচন পদার্থ ত্যাগ করে) 14) প্রাণীরা নির্দিষ্ট রেচন অঙ্গ বা তন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে দেহ থেকে রেচন পদার্থ ত্যাগ করে।
15) উদ্ভিদেরা অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড উভয়প্রকার গ্যাস গ্রহণ এবং বর্জন করে। (সালোকসংশ্লেষের সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ এবং অক্সিজেন ত্যাগ, আবার শ্বসনের সময় অক্সিজেন গ্রহণ এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে) 15) প্রাণীরা শুধুমাত্র অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বর্জন করে।
16) উদ্ভিদ দেহের বৃদ্ধি অসম, আমরণ এবং তা নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। (উদ্ভিদের কাণ্ডের এবং মূলের অগ্রভাগ সব সময় বৃদ্ধি পায়) 16) প্রাণীদের বৃদ্ধির সুষম এবং মৃত্যুর অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যায়।
17) উদ্ভিদের উত্তেজনায় সাড়া দেওয়া কেবলমাত্র উদ্দীপক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। স্নায়ুতন্ত্র না থাকায় উদ্ভিদের উত্তেজনায় সাড়া দেয়া স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাবে ঘটে না। 17) প্রাণীরা স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয় এবং এটি সমস্ত দেহেই প্রভাবিত হয়।
18) উদ্ভিদের সঞ্চিত খাদ্য প্রধানত শ্বেতসার। 18) প্রাণীদের সঞ্চিত খাদ্য প্রধানত গ্লাইকোজেন।
19) উদ্ভিদ কোষে সেলুলোজ, লিগনিন, সুবেরিন ইত্যাদি জড়বস্তু থাকে। 19) প্রাণী কোষে এই ধরনের কোন বস্তু থাকে না।
20) কিছু নিম্ন শ্রেণীর উদ্ভিদ ছাড়া সাধারণ উদ্ভিদরা বেশির ভাগই বীজের সাহায্যে বংশবিস্তার করে। 20) উন্নত প্রাণীরা সাধারণত বাচ্চা প্রসব করে বংশবিস্তার করে।
21) উদ্ভিদ দেহে অঙ্গজ জনন দেখা যায়। 21) প্রাণীদেহে সাধারণত অঙ্গজ জনন ঘটে না। (ব্যতিক্রম : হাইড্রা)
22) উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ভ্রুণ কিছুকাল সুপ্ত অবস্থায় থাকে। 22) প্রাণীদের ভ্রুণ কোন সময় সুপ্ত অবস্থায় থাকে না।



বিজ্ঞানবুক

লেখাটি কেমন কমেন্ট করে জানান। শেয়ার করুন এই পেজটি। পড়ুন অন্যান্য পোস্টগুলিও। youtube facebook

4 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন