নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো তড়িৎযোজী যৌগ ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক পার্থক্য গুলি।
তড়িৎযোজী ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য |
তড়িৎযোজী ও সমযোজী যৌগের মধ্যে পার্থক্য
তড়িৎযোজী যৌগ | সমযোজী যৌগ |
---|---|
১) তড়িৎযোজী যৌগ সাধারণত বিপরীত তড়িৎধর্মী ধাতব ও অধাতব মৌলের মিলনে গঠিত হয়। | ১) সমযোজী যৌগ সাধারণত অপরা তড়িৎধর্মী অধাতব মৌল গুলির মিলনে গঠিত হয়। |
২) ধাতব ও অধাতব পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন ও গ্ৰহণের মাধ্যমে আয়নে পরিণত হয়ে তড়িৎ আকর্ষণে তড়িৎযোজী যৌগ অণু গঠন করে। | ২) অধাতব পরমাণু গুলি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে পরস্পর যুক্ত হয়ে সমযোজী যৌগ অণু গঠন করে। |
৩) সাধারণ উষ্ণতায় কঠিন, কেলাসাকার পদার্থ। | ৩) সাধারণ উষ্ণতায় তরল বা গ্যাসীয়। |
৪) এদের গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক অনেক বেশি। | ৪) এদের গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক কম। |
৫) সাধারণত জলে দ্রাব্য কিন্তু জৈব দ্রাবকে অদ্রাব্য। | ৫) সাধারণত জলে অদ্রাব্য কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রাব্য। |
৬) কঠিন ও ভঙ্গুর। | ৬) মোমের মতো নরম। |
৭) গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে অর্থাৎ তড়িৎ বিশ্লেষ্য। | ৭) গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে না অর্থাৎ তড়িৎ অবিশ্লেষ্য। |
৮) এদের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়। | ৮) এদের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া মন্থর গতিতে হয়। |
৯) তড়িৎযোজী বন্ধন দৃঢ় নয় এবং বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ নেই। | ৯) সমযোজী বন্ধন দৃঢ় এবং বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ আছে। |
১০) সমাবয়বতা ধর্ম নেই। | ১০) সমাবয়বতা ধর্ম আছে। |
সমযোজী বন্ধন কাকে বলে ?
উত্তর: অণু গঠনের সময় একই বা ভিন্ন মৌলের পরমাণুগুলির মধ্যে ইলেকট্রন জোড় দ্বারা সৃষ্ট বন্ধনকে সমযোজী বন্ধন বলে।
তড়িৎযোজী বন্ধন কাকে বলে ?
উত্তর: যে আকর্ষণ বলের প্রভাবে বিপরীত তড়িৎধর্মী আয়ন গুলি একত্রিত হয়ে যৌগ অণু গঠন করে তাকে আয়নীয় বন্ধন বা তড়িৎযোজী বন্ধন বলে।
রাসায়নিক বন্ধন কয় প্রকারের ও কী কী ?
উত্তর: রাসায়নিক বন্ধন দু-প্রকারের, (১) তড়িৎযোজী বা আয়নীয় বন্ধন এবং (২) সমযোজী বন্ধন।
রাসায়নিক বন্ধন কাকে বলে ?
উত্তর: যে আকর্ষণ বলের প্রভাবে একই বা বিভিন্ন মৌলের পরমাণু গুলি একত্রিত হয়ে অণু গঠন করে এবং নিজেদের শক্তির হ্রাস ঘটিয়ে অধিকতর সুস্থিতি লাভ করে তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে।
সমযোজী যৌগের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of covalent compounds)
১) অধিকাংশ সমযোজী যৌগ সাধারণ উষ্ণতায় তরল বা গ্যাসীয়।
২) এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক সাধারণত কম হয়।
৩) সমযোজী যৌগের উপাদান মৌলগুলির পরমাণু গুলির মধ্যে বন্ধন খুব দৃঢ় হয় তাই যৌগ গুলির স্থায়িত্ব বেশি।
৪) সমযোজী যৌগ গুলি সাধারণত জলে অদ্রাব্য কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমন, বেঞ্জিন, ইথার, ক্লোরোফর্ম ইত্যাদিতে দ্রাব্য।
৫) সমযোজী যৌগ গুলি গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নে বিয়োজিত হয় না, ফলে তড়িৎ পরিবহন করে না।
৬) প্রতিটি সমযোজী বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ থাকে।
৭) এই যৌগগুলি আয়নে বিয়োজিত না হয়ে আণবিক অবস্থায় থাকে বলে বিক্রিয়ার গতি অপেক্ষাকৃত মন্থর।
৮) সমযোজী যৌগ গুলির সমাবয়বতা ধর্ম আছে অর্থাৎ, একই আণবিক সংকেতে কিন্তু গঠনগত ভিন্নতায় বিভিন্ন যৌগ পাওয়া যায়।
তড়িৎযোজী যৌগের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of electrovalent compounds)
১) তড়িৎযোজী যৌগ গুলি কঠিন কেলাসাকার হয়।
২) তড়িৎযোজী যৌগ গুলির আয়নীয় বন্ধন দৃঢ় হওয়ায় এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি হয়।
৩) তড়িৎযোজী যৌগ গুলি সাধারণত জলে দ্রবীভূত হয়, কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমন বেঞ্জিন, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড -এ দ্রবীভূত হয় না।
৪) কঠিন অবস্থায় তড়িৎযোজী যৌগ গুলি তড়িৎ পরিবহন করে না, কিন্তু জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় অণুগুলি আয়নে বিয়োজিত হয় এবং তড়িৎ পরিবহন করে।
৫) তড়িৎযোজী যৌগের প্রতিটি অণুতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক দুটি মেরু থাকে এবং এক একটি অণু ছোটো চুম্বকের মতো আচরণ করে।
৬) একটি আয়ন তার বিপরীত তড়িৎধর্মী আয়নকে যে কোনো দিক থেকে আকর্ষণ করে বলে বন্ধনের নির্দিষ্ট কোনো অভিমুখ নেই।
৭) তড়িৎযোজী যৌগের কেলাসগুলি সহজেই ভেঙে যায়।
৮) বিভিন্ন তড়িৎযোজী যৌগের উপাদান আয়নগুলি একই রকমের কেলাস গঠন করে। এদের সমাকৃতি সম্পন্ন কেলাস বলে।
কেমন লাগছে বিজ্ঞানবুক পড়তে? অবশ্যই জানান কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে। আপনি কি Bigyanbook এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি ইউটিউবে গিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন বিজ্ঞানবুক এর ইউটিউব চ্যানেল। ফলো করুন বিজ্ঞানবুক -কে ফেসবুকে। শেয়ার করুন এই আর্টিকেলটি অন্যান্যদের সাথে। পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক। ধন্যবাদ।।