নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো, পরমাণুর গঠন সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তর। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
প্রশ্ন-উত্তর : পরমাণুর গঠন |
১) পরমাণুর মধ্যে সবচেয়ে ভারী কণা কোনটি ?
উত্তর : পরমাণুর মধ্যে সবচেয়ে ভারী কণা হলো নিউট্রন।
২) পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত কণাগুলিকে কি বলে ?
উত্তর : পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত প্রোটন ও নিউট্রন কণা গুলি কে একত্রে নিউক্লিয়ন (nucleon) বলে।
৩) কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিউট্রন থাকে না ?
উত্তর : হাইড্রোজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিউট্রন থাকে না।
৪) তড়িৎ যুক্ত পরমাণু বা মূলককে কি বলে ?
উত্তর : তড়িৎ যুক্ত পরমাণু বা মূলককে আয়ন বলে।
৫) প্রোটন পরমাণুর কোন অংশে থাকে ?
উত্তর : প্রোটন পরমাণুর কেন্দ্রকে থাকে।
৬) যে বল নিউক্লিয়ন গুলি কে একত্রে ধরে রাখে তাকে কি বল বলে ?
উত্তর : যে বল নিউক্লিয়ন গুলি কে একত্রে ধরে রাখে তাকে নিউক্লিয় বল (Nuclear force) বলে।
৭) পরমাণু ক্রমাঙ্ক বলতে কী বোঝো ?
উত্তর : কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যতসংখ্যক প্রোটন থাকে সেই সংখ্যাকে ওই মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic number) বলে।
৮) আইসোটোপ কাকে বলে ?
উত্তর : একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণু, অনিবার্য কারণে যাদের পরমাণু ক্রমাঙ্ক একই, কিন্তু নিউক্লিয়াসে বিভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্যে ভর সংখ্যা ভিন্ন হয় তাদের পরস্পরের আইসোটোপ বলে।
৯) সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠন এর দুটি সাদৃশ্য লেখো।
উত্তর : সৌরজগতের সঙ্গে পরমাণুর গঠন এর সাদৃশ্য
সৌরজগৎ :- (i) সৌরজগতের কেন্দ্রে থাকে সূর্য এবং সূর্যকে ঘিরে বিভিন্ন কক্ষপথে গ্রহগুলি ঘুরতে থাকে।
পরমাণুর গঠন :- (i) পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে নিউক্লিয়াস এবং নিউক্লিয়াসকে ঘিরে ইলেকট্রনগুলি বিভিন্ন কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।
সৌরজগৎ :- (ii) সৌরজগতের অধিকাংশ স্থান ফাঁকা সূর্য ও গ্রহ গুলির সম্মিলিত আয়তন সমগ্র সৌরজগতে তুলনায় খুবই কম।
পরমাণুর গঠন :- (ii) পরমাণুর বেশিরভাগ স্থান ফাঁকা নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন গুলির মোট আয়তন সমগ্র পরমাণুর আয়তনের তুলনায় খুবই কম।
১০) হাইড্রোজেনের আইসোটোপ গুলির নাম লেখো।
উত্তর : হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপের আছে। এগুলি হলো — (a) সাধারণ হাইড্রোজেন বা প্রোটিয়াম (1H1), (b) ভারী হাইড্রোজেন বা ডয়টেরিয়াম (1H2) এবং (c) ট্রাইটিয়াম (1H3)।
১১) নিউক্লিয়ন বলতে কী বোঝো ?
উত্তর : পরমাণুর কেন্দ্রকে ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটন কণা গুলির সঙ্গে নিস্তড়িত কণা নিউট্রন একত্রে পুঞ্জীভূত অবস্থায় থাকে। পরমাণুর কেন্দ্রে অবস্থিত এই প্রোটন ও নিউট্রন কণা গুলি কে একত্রে নিউক্লিয়ন বলে।
১২) আয়ন ও পরমাণুর মধ্যে কোনটি সুস্থিত ও কেন ?
উত্তর : পরমানুর চেয়ে আয়ন বেশি সুস্থিত কারণ পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন করে যখন আয়নে পরিণত হয় তখন আয়নটি নিকটতম নিষ্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। সোডিয়ামের পরমাণু ক্রমাঙ্ক 11। মৌলটির কোনো পরমাণু শেষ কক্ষের ইলেকট্রন বর্জন করলে উৎপন্ন Na+ ক্যাটায়ন টি নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়নের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। তাই সোডিয়াম পরমাণু জলের সঙ্গে তীব্রভাবে বিক্রিয়া করলেও, সোডিয়াম আয়ন জলের সঙ্গে কোনো বিক্রিয়া করে না।
১৩) আইসোটোপ গুলির তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর : আইসোটোপ গুলির বৈশিষ্ট্য
(i) আইসোটোপ গুলি একই মৌলের পৃথক ভর সম্পন্ন পরমাণু মাত্র।
(ii) আইসোটোপ গুলির পরমাণু ক্রমাঙ্ক একই হওয়ার জন্যে, তাদের রাসায়নিক ধর্ম, যোজ্যতা এবং ইলেকট্রন বিন্যাস একই হয়।
(iii) এরা পর্যায় সারণিতে একই স্থান দখল করে।
১৪) নিউক্লাইড কি ?
উত্তর : নির্দিষ্ট পারমাণবিক সংখ্যা ও ভর সংখ্যা বিশিষ্ট নিউক্লিয়াস বা পরমাণুকেন্দ্রককে নিউক্লাইড বলে। উদাহরণ - 1H1, 6C12, 11Na23 প্রত্যেকটি একেকটি নিউক্লাইড।
১৫) পারমাণবিক ভর কাকে বলে ?
উত্তর : কোন মৌলের একটি পরমাণু একটি কার্বন পরমাণু (6C12) -এর ভরের 1/12 অংশে যতক্ষণ ভারী সেই গুণিতক সংখ্যা কে ওই মৌলের পারমাণবিক ভর বলে।
১৬) C-12 স্কেলে মৌলের পারমাণবিক ভরের সংজ্ঞা লেখো।
উত্তর : কোন মৌলের একটি পরমাণু একটি কার্বন পরমাণু (6C12) -এর ভরের 1/12 অংশে যতক্ষণ ভারী সেই গুণিতক সংখ্যা কে ওই মৌলের পারমাণবিক ভর বলে।
১৭) ভর সংখ্যা কাকে বলে ?
উত্তর : কোনো মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যতগুলি প্রোটন ও নিউট্রন থাকে তাদের মোট সংখ্যা কে মৌলের পরমাণুটির ভর সংখ্যা বলে।
১৮) যোজ্যতা ইলেকট্রন কী ?
উত্তর : পরমাণুক্রমাঙ্ক, কেন্দ্রকে ঘিরে বিভিন্ন কক্ষে আবর্তনরত মোট ইলেকট্রন সংখ্যারও সমান বলে এটির সাহায্যে পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষের ইলেকট্রন সংখ্যা নির্ণয় করা যায়। সর্বশেষ কক্ষের ইলেকট্রন সংখ্যা মৌলটির যোজ্যতা স্থির করে। এদের যোজ্যতা ইলেকট্রন বা যোজক ইলেকট্রন বলে।
১৯) নিষ্ক্রিয় মৌল কাকে বলে ?
উত্তর : যে সব মৌলের পরমাণুর শেষ কক্ষে ইলেকট্রন সংখ্যার পূর্তি ঘটে গেছে অর্থাৎ শেষ কক্ষে ইলেকট্রন সংখ্যা 8 (হিলিয়ামের ক্ষেত্রে 2) , সেগুলি খুব সুস্থিত হয়, এই মৌল গুলিকে নিষ্ক্রিয় মৌল বলে।
২০) নিষ্ক্রিয় মৌলের উদাহরণ লেখো।
উত্তর : কয়েকটি নিষ্ক্রিয় মৌলের উদাহরণ হলো — হিলিয়াম, নিয়ন, আর্গন, জেনন, ক্রিপটন ইত্যাদি।
২১) পরমাণুর কেন্দ্রক কাকে বলে ?
উত্তর : পরমাণুর কেন্দ্রে খুবই ক্ষুদ্র অংশে পরমাণুর প্রায় সমস্ত ধনাত্মক আধান অবস্থিত। একে পরমাণুর কেন্দ্রক বলে।
২২) পরমাণুর কয়টি অংশ আছে এবং কি কি ?
উত্তর : পরমাণুর দুটি অংশ আছে। কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস এবং অন্যটি হলো কেন্দ্রক বহির্ভূত ইলেকট্রন মহল।
২৩) পরমাণু কাকে বলে ?
উত্তর : মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যার মধ্যে মৌলটির সমস্ত গুণ বর্তমান থাকে এবং যারা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাকে পরমাণু বলে।
২৪) ডালটনের পরমাণুবাদ এর বর্ণনা দাও।
উত্তর : (i) প্রতিটি মৌলিক পদার্থ অতিক্ষুদ্র, অবিভাজ্য কণা দিয়ে তৈরি, এই ক্ষুদ্র কণা গুলিকে পরমাণু বলে। (ii) একটি নির্দিষ্ট মৌলিক পদার্থের পরমাণু গুলি ধর্মে ও ভরে একই। (iii) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণু গুলি ধর্ম ও ভরে বিভিন্ন। (iv) রাসায়নিক বিক্রিয়ায়, বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুর গুলি পূর্ণসংখ্যার সরল অনুপাতে যুক্ত হয়ে যৌগিক পদার্থ গঠন করে।
২৫) ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন এর আবিষ্কর্তাদের নাম লেখো।
উত্তর : ইলেকট্রন - জে. জে. টমসন।
প্রোটন - রাদারফোর্ড।
নিউট্রন - স্যাডউইক।
কেমন লাগছে বিজ্ঞানবুক পড়তে? অবশ্যই জানান কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে। আপনি কি Bigyanbook এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন? যদি না করে থাকেন তাহলে এক্ষুনি ইউটিউবে গিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন বিজ্ঞানবুক এর ইউটিউব চ্যানেল। ফলো করুন বিজ্ঞানবুক -কে ফেসবুকে। শেয়ার করুন এই আর্টিকেলটি অন্যান্যদের সাথে। পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক। ধন্যবাদ।।