classes
classes
 *West Bengal board only.

জীবাশ্মের গুরুত্ব | Importance of Fossil - Bigyanbook

{tocify} $title={এক নজরে শিরোনাম}
www.bigyanbook.co.in

নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো জীবাশ্মের গুরুত্ব। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।


জীবাশ্মের গুরুত্ব (Importance of Fossil)

১) জীবাশ্ম জীবজগতের সৃষ্টির রহস্য এবং বিবর্তনকে বুঝতে সাহায্য করে : 

জীবাশ্ম পাঠ করে পৃথিবীর বুকে কি জাতীয় উদ্ভিদ অথবা প্রাণীর প্রথম সৃষ্টি ঘটেছিল সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক জীবাশ্মের বৈশিষ্ট্য দেখে বোঝা যায়, সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থা থেকে শুরু করে বর্তমান পৃথিবীর আবহাওয়ার কিভাবে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক যুগে জৈবিক সক্রিয়তার প্রমাণ যে জীবাশ্ম পাওয়া যায় তাকে ট্রেস ফসিল (Trace Fossil) বা ইকনোফসিল (Ichnofossil) বলে। এর সাহায্যে বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক যুগের, বিভিন্ন জীব গোষ্ঠীর পরিচয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

জীবাশ্ম ঘটিত প্রমাণ এর সাহায্যে অনুমান করা সম্ভব হয়েছে যে 225 মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর স্থলভাগ একক ভূখণ্ডরূপে অবস্থিত ছিল যার নাম প্যানগিয়া (Pangea)। বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় এই একক ভূখণ্ড নিরবচ্ছিন্ন হয়ে লওরেশিয়া এবং গন্ডোয়ানা ভূখণ্ডে বিভক্ত হয়। মেসোজোয়িক যুগে এই গন্ডোয়ানা ভূখণ্ড ছিল এক বিশাল ভূখণ্ড যার মধ্যে ছিল ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আন্টার্টিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, মাদাগাস্কার প্রভৃতি দেশ। ক্রিটেশিয়াস পর্যায় এই বিশাল ভূখণ্ড ভিন্ন মহাদেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই সমস্ত ঘটনাগুলি পৃথক মহাদেশ গুলির জীবাশ্ম ঘটিত প্রমাণ গুলির মধ্যে গঠনগত সাদৃশ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা যায়।


২) ভূতাত্ত্বিক যুগনির্দেশক হিসেবে সূচক জীবাশ্মের ভূমিকা :

কতগুলি জীবাশ্ম আছে যারা প্রাগৈতিহাসিক যুগকে নির্দেশ করে অর্থাৎ যে যুগে তারা পৃথিবীর বুকে আবির্ভূত হয়েছিল তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে, সেই সকল জীবাশ্মকে সূচক জীবাশ্ম বলে। সূচক জীবাশ্ম স্ট্যাটিগ্রাফিক ইন্ডিকেটর (Stratigraphic indicator) হিসেবে কাজ করে।


৩) হাইড্রোকার্বন জ্বালানির অনুসন্ধানে জীবাশ্মের গুরুত্ব :

সমুদ্র, উপসাগর, হ্রদ প্রভৃতি তীরে অসংখ্য ফাইটোপ্ল্যাংটন, প্রাথমিক খাদক, জুপ্ল্যাংটন প্রভৃতি বহুযুগ ধরে সঞ্চিত হয়ে তাদের দেহ নিঃসৃত মোমজাতীয় পদার্থ দিয়ে ভৌত-রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্যমে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বন উৎপাদন করে। সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে অথবা তীরবর্তী অঞ্চল যেখানে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেই স্থানটিকে কন্টিনেন্টাল সেলফ্ (Continental shelf) বলা হয়। এইভাবে উৎপন্ন অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম এর সাথে বিভিন্ন ফাইটোপ্লাঙ্কটনের জীবাশ্ম মিশে থাকে। ভূতত্ত্ববিদরা সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে এই জাতীয় জীবাশ্মের অনুসন্ধান চালান এবং এগুলির অস্তিত্বের উদঘাটন করে, প্রত্ন-উপকূলবর্তী রেখা বা প্যালিওসোর লাইন (Palaeoshore line) নির্ধারণ করেন।‌ এই প্যালিওসোর লাইন সম্ভাব্য অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম এর উৎসস্থল হিসেবে পরিগণিত হয়।


৪) প্রাচীন যুগের DNA গবেষণায় জীবাশ্মের গুরুত্ব :

বিভিন্ন প্রত্ন-যুগের উদ্ভিদ নমুনা থেকে DNA সংগ্রহ করে তার নাইট্রোজেন বেস সংখ্যা ও সজ্জাক্রম নির্ধারণ করা হয় বিজ্ঞানের যে শাখায় তাকে মলিকিউলার আর্কিওলজি বলে। এইভাবে জীবাশ্ম নমুনার DNA বেস সজ্জাক্রম নির্ধারণের মাধ্যমে কিভাবে এই সজ্জাক্রমের বিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটেছে তা নির্ধারণ করা যায়। এর ফলে আণবিক স্তরে প্রাগৈতিহাসিক যুগের উদ্ভিদ গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিজনিগত সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যে বিবর্তনের ধারাবাহিক পথ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে।


৫) প্রত্নযুগে উদ্ভিদ ও প্রাণীর আন্তঃক্রিয়া এবং তাদের সমবিবর্তন সম্পর্কে ধারণা লাভের ক্ষেত্রে জীবাশ্মের ভূমিকা :

অতীত যুগের উদ্ভিদ জীবাশ্মের গায়ে কামড়ের চিহ্ন কিংবা অন্যান্য বিচরণজনিত ক্ষতের অবস্থান লক্ষ্য করে সেই সময়কার পতঙ্গ শ্রেণীর প্রাণীর পরিচয় জানা যায় এবং কোন গোষ্ঠীভুক্ত উদ্ভিদের উপর তারা বিচরণ করত সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়।


এবারে দেখে নেব এই আলোচনা থেকে কিছু প্রশ্ন উত্তর।


• ট্রেস ফসিল কাকে বলে ? (What is Trace Fossil ?)

ভূতাত্ত্বিক যুগে জৈবিক সক্রিয়তার প্রমাণ যে জীবাশ্ম পাওয়া যায় তাকে ট্রেস ফসিল (Trace Fossil) বা ইকনোফসিল (Ichnofossil) বলে।


• ইকনো ফসিল কাকে বলে ? (What is Ichnofossil ?)

ভূতাত্ত্বিক যুগে জৈবিক সক্রিয়তার প্রমাণ যে জীবাশ্ম পাওয়া যায় তাকে ট্রেস ফসিল (Trace Fossil) বা ইকনোফসিল (Ichnofossil) বলে।


• প্যানগিয়া কি ? (What is Pangea ?)

জীবাশ্ম ঘটিত প্রমাণ এর সাহায্যে অনুমান করা সম্ভব হয়েছে যে 225 মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর স্থলভাগ একক ভূখণ্ডরূপে অবস্থিত ছিল যার নাম প্যানগিয়া (Pangea)।


• সূচক জীবাশ্ম কাকে বলে?

কতগুলি জীবাশ্ম আছে যারা প্রাগৈতিহাসিক যুগকে নির্দেশ করে অর্থাৎ যে যুগে তারা পৃথিবীর বুকে আবির্ভূত হয়েছিল তার নির্দেশক হিসেবে কাজ করে, সেই সকল জীবাশ্মকে সূচক জীবাশ্ম বলে।


• কন্টিনেন্টাল সেলফ কাকে বলে ? (What is continental shelf ?)

সমুদ্র, উপসাগর, হ্রদ প্রভৃতি তীরে অসংখ্য ফাইটোপ্ল্যাংটন, প্রাথমিক খাদক, জুপ্ল্যাংটন প্রভৃতি বহুযুগ ধরে সঞ্চিত হয়ে তাদের দেহ নিঃসৃত মোমজাতীয় পদার্থ দিয়ে ভৌত-রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্যমে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বন উৎপাদন করে। সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে অথবা তীরবর্তী অঞ্চল যেখানে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেই স্থানটিকে কন্টিনেন্টাল সেলফ্ (Continental shelf) বলা হয়।


• অ্যাম্বার কাকে বলে ? (What is Amber ?)

অতীত যুগে কনিফার জাতীয় উদ্ভিদদেহে নিঃসৃত রজন মাটিতে পড়ে শক্ত হয়ে জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। অনেক সময় এই জাতীয় জীবাশ্মের গায়ে বিভিন্ন পতঙ্গ অথবা ফুলের ছাপ দেখতে পাওয়া যায়। এই জীবাশ্মকে অ্যাম্বার বলে।

ধন্যবাদ আপনাকে বিজ্ঞানবুক পড়ার জন্য, পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক, ফলো করুন বিজ্ঞানবুক সোশ্যাল মিডিয়াতে, শেয়ার করুন বিজ্ঞানবুকের আর্টিকেলগুলি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে, ধন্যবাদ।।

বিজ্ঞানবুক

লেখাটি কেমন কমেন্ট করে জানান। শেয়ার করুন এই পেজটি। পড়ুন অন্যান্য পোস্টগুলিও। youtube facebook

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন