নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো থিওরি অফ অ্যাবায়োজেনেসিস এবং থিওরি অফ বায়োজেনেসিস এর মধ্যে পার্থক্য। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
পৃথিবীতে কিভাবে জীবনের উৎপত্তি ঘটেছিল এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা আমাদের নেই। কিন্তু অনুমানের উপর ভিত্তি করে জীবন সৃষ্টির কিছু মতবাদ উপস্থাপিত হয়েছে। এদের মধ্যে এক মতবাদকে বলা হয় থিওরি অফ অ্যাবায়োজেনেসিস এবং অন্য একটি মতবাদ কে বলা হয় থিওরি অফ বায়োজেনেসিস।
থিওরি অফ অ্যাবায়োজেনেসিস :
এই থিওরি অনুযায়ী, নির্জীব জড় বস্তু থেকে আদি প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছে। একে স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টি (spontaneous creation) বলে।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড রৌদ্র তাপের পরে বর্ষার বৃষ্টির শুরুতে ব্যাঙ এর আবির্ভাব ঘটা, পচা মাংস থেকে ম্যাগট ও মাছির উদ্ভব, নোংরা কাপড় বা খড়ের গাদা থেকে ইঁদুর জন্মানো প্রভৃতি অ্যাবায়োজেনেসিস এর উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়। অ্যাবায়োজেনেসিস এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ না থাকায় এই তত্ত্ব কে মেনে নেওয়া যায় না।
থিওরি অফ বায়োজেনেসিস :
এই থিওরী অনুযায়ী কেবলমাত্র একটি জীবিত সত্তা থেকে আরেকটি জীবসত্তা জন্ম নিতে পারে। থিওরি অফ বায়োজেনেসিস এর প্রবক্তা হলেন লুই পাস্তুর। তিনি বিশেষ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে দেখেছেন যে, পরিত্যক্ত খাদ্যবস্তু কোনমতে সংক্রামিত না হলে তা থেকে আপনা-আপনি কোনো ম্যাগট, কোনো মাছি অথবা কোন জীবাণু জন্মাতে পারে না। আধুনিক বিজ্ঞান থিওরি অফ অ্যাবায়োজেনেসিস এর পরিবর্তে থিওরি অফ বায়োজেনেসিসকে স্বীকৃতি দেয়।
অ্যাবায়োজেনেসিস ও বায়োজেনেসিসের পার্থক্য (Difference between abiogenesis and biogenesis)
১) অ্যাবায়োজেনেসিস : এই তত্ত্ব অনুযায়ী নির্জীব জড় বস্তু থেকে জীব সৃষ্টি হয়।
বায়োজেনেসিস : এই তত্ত্ব অনুযায়ী কেবল জীবিত বস্তুই আর একটি জীবের জন্ম দিতে পারে।
২) অ্যাবায়োজেনেসিস : কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বারা এই তত্ত্ব প্রমাণিত নয়।
বায়োজেনেসিস : বিশেষ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে এই তত্ত্ব প্রমাণিত।
৩) অ্যাবায়োজেনেসিস : পচা মাংস থেকে ম্যাগট কিংবা মাছি উৎপাদন, নোংরা জামা কাপড় কিংবা খড়ের গাদায় ইঁদুরের আবির্ভাব কিংবা বর্ষা থেকে ব্যাঙ এর আবির্ভাব এর উদাহরণ রূপে উপস্থাপন করা হয়।
বায়োজেনেসিস : পচা মাংস বা খাবার সংক্রামিত হতে না দিলে বা নোংরা জামাকাপড় বা খড়ের গাদা সংরক্ষিত থাকলে কোনো মাছি কিংবা ইঁদুর জন্মাতে পারে না।
৪) অ্যাবায়োজেনেসিস : এই থিওরি স্বতঃস্ফূর্ত আবির্ভাব কে সমর্থন করে।
বায়োজেনেসিস : এই থিওরি স্বতঃস্ফূর্ত আবির্ভাবকে সমর্থন করে না।
৫) অ্যাবায়োজেনেসিস : এটি ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা ও ভগবানের অস্তিত্বভিত্তিক একটি মতবাদ।
বায়োজেনেসিস : এই মতবাদ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর এবং যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত।
ধন্যবাদ আপনাকে বিজ্ঞানবুক পড়ার জন্য, পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক, ফলো করুন বিজ্ঞানবুক সোশ্যাল মিডিয়াতে, শেয়ার করুন বিজ্ঞানবুকের আর্টিকেলগুলি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে, ধন্যবাদ।।