classes
classes
 *West Bengal board only.

আরকি | Archaea - Bigyanbook

{tocify} $title={এক নজরে শিরোনাম}

নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞানবুক এ। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো আরকি সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

www.bigyanbook.co.in


আরকি কাকে বলে? (What is Archaea?)

যে জীবসম্প্রদায় এককোশী প্রোক্যারিওটিক প্রকৃতির হয় এবং যাদের কোশপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইক্যান থাকে না এবং চরম পরিবেশে (extreme environment) বসবাস করে তাদের আরকিব্যাকটেরিয়া (Archaebacteria) বা আরকি (Archaea) বলে।


এবারে দেখে নেবো আরকি এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য।


আরকির বৈশিষ্ট্য (Characters of Archaea)

১) কোশপ্রাচীর (Cell wall) :

আরকি এর কোষপ্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইক্যান(Peptidoglycan) থাকে না। এদের কোষপ্রাচীরে সিউডোমিউরিন (Pseudomurein) উপস্থিত। Methanospirillum নামের আরকি এর কোষপ্রাচীরের বাইরের স্তরটি সম্পূর্ণভাবে প্রোটিন দ্বারা নির্মিত। Methanospirillum নামের এই আরকি এর কোষপ্রাচীর প্রধানত হেটারোপলিস্যাকারাইড (heteropolysaccharide) দিয়ে গঠিত, এই হেটারোপলিস্যাকারাইডের মধ্যে গ্যালাক্টোসাম্যাইন, প্রশম শর্করা ও ইউরোনিক অ্যাসিড থাকে।


২) কোশ পর্দা (Cell membrane) :

আরকি বা আরকিব্যাকটেরিয়ার কোশপর্দাতে ডাই-ইথার (C²⁰ ফাইটেন) এবং ডাই-গ্লিসারল টেট্রাইথার (C⁴⁰ বাইফাইটেন) উপস্থিত। কোশপর্দা বা সেল্ মেমব্রেন -এর বৈশিষ্ট্য হলো যে লিপিডের কার্বন শৃঙ্খলগুলি শাখান্বিত যা গ্লিসারলের সঙ্গে ইথার বন্ধনীর মাধ্যমে যুক্ত থাকে, যেখানে ব্যাকটেরিয়ার সরল কার্বন শৃঙ্খলগুলি গ্লিসারলের সঙ্গে এস্টার বন্ধনীর মাধ্যমে যুক্ত হয়।


৩) চরম বাসস্থান (Extreme habitat) :

এই এককোশী প্রোক্যারিওটিক জীব আরকি বা আরকিব্যাকটেরিয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো যে, এরা সেই পরিবেশে বসবাস করে যেখানে অন্যান্য অণুজীবেরা বসবাস করতে পারে না। চরম পরিবেশে বসবাসকারী আরকি হলো — Halococcus , Halobacterium প্রভৃতি। এই আরকিরা তীব্র লবণাক্ত মাধ্যমে জন্মায় এবং এরা 4-5 মোলার NaCl দ্রবণে সর্বাধিক বৃদ্ধি পায়। Halobacterium আরকি এর উপস্থিতি সম্পৃক্ত লবণ (NaCl) দ্রবণেও লক্ষ করা যায়। অনেক আরকি তীব্র আম্লিক বা তীব্র ক্ষারীয় মাধ্যমে জন্মায়, যেমন — Halobacterium salinarum নামের আরকি তীব্র আম্লিক (pH 2.0) মাধ্যমে জন্মায় এবং Thermococcus alkalinphilus নামের আরকি তীব্র ক্ষারীয় (pH 10.5) মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।


৪) শক্তি উৎপাদন (Production of energy) :

আরকি গোষ্ঠীর অণুজীবেরা প্রধানত কেমোসিন্থেসিস পদ্ধতিতে শক্তি উৎপাদন করে। এরা সাধারণত CO2 এবং H2 -এর সমন্বয়ে মিথেন উৎপাদনের মাধ্যমে ATP সংশ্লেষ করে।

CO2 + 4H2 → CH4 + H2O + ATP


Halobacterium নামের আরকি ব্যাকটেরিওরোডপসিন (Bacteriorhodopsin) নামের একটি রঞ্জক তৈরি করে যা আলোকশক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোশপর্দায় প্রোটনচালক বল (Protonmotive force) সৃষ্টি করে ATP উৎপাদন করে।


৫) আরকি জিনোম (Genome of Archaea) :

প্রোক্যারিওটিক আরকি এর জেনেটিক পদার্থ প্রধানত একটিমাত্র দ্বিতন্ত্রী DNA । হিস্টোন নামের ক্ষারীয় প্রোটিন অনুপস্থিত থাকায় এরা ক্রোমাটিন তন্তু এবং ক্রোমোজোম গঠন করতে পারে না।আর্কির নিউক্লিওটাইড বিন্যাসে বৈচিত্র্য দেখা যায়। হেলোফিলিক আর্কির G + C -এর পরিমাণ 66 থেকে 68 শতাংশ। যেখানে থারমোঅ্যাসিডোফিলস (Thermoacidophiles) -এ G + C -এর পরিমাণ 46 শতাংশের কাছাকাছি এবং এদের DNA অণুর ওজন 8×10⁸ থেকে 10×10⁸ ডালটন হয় যা স্বাধীনজীবী অণুজীবের মধ্যে ক্ষুদ্রতম জিনোম। বর্তমানে কিছু আরকিব্যাকটেরিয়ায় প্লাসমিড -এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।


৬) RNA এর বৈশিষ্ট্য (Characteristic of RNA) :

         a) আরকিব্যাকটেরিয়ার m-RNA পলিসিসট্রনিক (Polycistronic) প্রকৃতির হয় অর্থাৎ একটি m-RNA থেকে একাধিক প্রোটিন সংশ্লিষ্ট হয়।

         b) r-RNA তিন ধরনের হয় 5S, 16S, 23S । r-RNA এর মধ্যে CACACACCG এই নিউক্লিওটাইড সিকুয়েন্স দেখা যায় যা অন্যান্য জীবে অনুপস্থিত।

         c) r-RNA কোনো ফাঁস বা লুপ (loop) গঠন করে না।


৭) রাইবোজোম এবং প্রোটিন সংশ্লেষ (Ribosome and protein synthesis) :

আরকি রাইবোজোম 70S প্রকৃতির।ইউক্যারিওটের মতো প্রোটিন সংশ্লেষের সময় মিথিওনিন অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রথমে সংযুক্ত হয়।


৮) অ্যান্টিবায়োটিক সুবেদিতা (Antibiotic resistance) :

আরকিব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক সুবেদী নয়। অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক এদের রাইবোজোম গঠন বা প্রোটিন সংশ্লেষকে বাধাদান করতে পারে না।


৯) শ্রেণীবিভাগ (Classification) :

বাসস্থান এবং বিপাক প্রক্রিয়া অনুযায়ী আরকি বা আরকিব্যাকটেরিয়াকে প্রধানত তিনটি উপবিভাগে ভাগ করা হয়। যেগুলি হলো —

        a) হ্যালোফিলস (Halophiles) : এই ধরনের আরকিরা তীব্র লবণাক্ত স্থানে জন্মায়। উদাহরণ - Halobacterium

        b) থার্মোঅ্যাসিডোফিলস (Thermoacidophiles) : এই ধরনের আরকিদের উচ্চ তাপমাত্রা ও আম্লিক পরিবেশে সর্বাধিক বৃদ্ধি হয়।

        c) মিথানোজেনস (Methanogens) : এই ধরনের আরকিরা হাইড্রোজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডকে ব্যবহার করে মিথেন ও শক্তিধর যৌগরূপে ATP উৎপন্ন করে। উদাহরণ - Methanobacterium



এবারে দেখে নেওয়া যাক কিছু সহজ প্রশ্ন ও তার উত্তর।

প্রশ্ন উত্তর 

• তীব্র আম্লিক পরিবেশে বসবাসকারী একটি আর্কির নাম বলো।

— তীব্র আম্লিক পরিবেশে বসবাসকারী একটি আর্কি হলো Halobacterium salinarum


• তীব্র ক্ষারীয় পরিবেশে বসবাসকারী একটি আর্কির নাম বলো।

— তীব্র ক্ষারীয় পরিবেশে বসবাসকারী একটি আর্কি হলো Thermococcus alkalinphilus


• আর্কির কোষপ্রাচীরে কী উপস্থিত?

— আর্কির কোষপ্রাচীরে সিউডোমিউরিন (Pseudomurein) উপস্থিত।


• আর্কির জেনেটিক পদার্থ কী?

— আর্কির জেনেটিক পদার্থ হলো একটিমাত্র দ্বিতন্ত্রী DNA ।


• আরকিতে কোন প্রকৃতির রাইবোজোম দেখা যায়?

— আরকিতে 70S প্রকৃতির রাইবোজোম দেখা যায়।


আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিজ্ঞানবুক পড়ার জন্য।

এভাবেই পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক।

ফলো করুন বিজ্ঞানবুক ফেসবুক, টুইটারে।

এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ারও করতে পারেন।

সাবস্ক্রাইব করুন বিজ্ঞানবুক ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপনি পাবেন বিভিন্ন বিষয়ের উপর পডকাস্ট বা অডিওবুক। এছাড়াও আপনি আরো অনেক আপডেট পাবেন।

ফলো করুন বিজ্ঞানবুক গুগল নিউজে। একেবারে উপরের দিকে গুগল নিউজের লিংক দেওয়া আছে।

আবারও আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

পড়তে থাকুন, দেখতে থাকুন বিজ্ঞানবুক।

বিজ্ঞানবুক

লেখাটি কেমন কমেন্ট করে জানান। শেয়ার করুন এই পেজটি। পড়ুন অন্যান্য পোস্টগুলিও। youtube facebook

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন