classes
classes
 *West Bengal board only.

প্রশ্ন-উত্তর : রেচন | Questions-Answere : Excretion

{tocify} $title={এক নজরে শিরোনাম}

নমস্কার স্বাগত আপনাকে বিজ্ঞান বুকে। এই আর্টিকেলে আমরা রেচন থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখব। রেচনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর এই আর্টিকেলের আলোচনা করা হয়েছে।

www.bigyanbook.co.in


১) রেচন কাকে বলে?

উত্তর: যে জৈবিক ক্রিয়ার মাধ্যমে জীবদেহে বিপাক এর ফলে উৎপন্ন অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকারক উপজাত দ্রব্যসমূহ দেহ থেকে নির্গত বা অপসারিত হয় অথবা অদ্রাব্য কোলয়েড কণা হিসেবে দেহের কোনো অংশে সাময়িক ভাবে সঞ্চিত থাকে, সেই জৈবিক ক্রিয়াকে রেচন বলে।


২) পতঙ্গদের রেচন অঙ্গের নাম কী?

উত্তর; পতঙ্গদের রেচন অঙ্গের নাম হলো ম্যালপিজিয়ান নালিকা।


৩) চিংড়ির রেচন অঙ্গের নাম কী?

উত্তর: চিংড়ির রেচন অঙ্গের নাম হলো সবুজ গ্ৰন্থি বা শুঙ্গ গ্ৰন্থি।


৪) মাকড়সার রেচন অঙ্গের নাম কী?

উত্তর: মাকড়সার রেচন অঙ্গের নাম হলো কক্সাল গ্ৰন্থি।


৫) কাঁকড়া বিছের রেচন অঙ্গের নাম কী?

উত্তর: কাঁকড়া বিছের রেচন অঙ্গের নাম হলো কক্সাল গ্ৰন্থি।


৬) ফ্লেমকোশ বা শিখাকোশ কাদের রেচন অঙ্গ?

উত্তর: চ্যাপ্টা কৃমিদের (প্লানেরিয়া, ফিতা কৃমি ইত্যাদি) রেচন অঙ্গ হলো ফ্লেমকোশ বা শিখাকোশ।


৭) রেচন তন্ত্র কাকে বলে? (What is excretory system?)

উত্তর: রেচনে সাহায্য কারী অঙ্গ গুলি মিলিত হয়ে যে তন্ত্র গঠিত হয় তাকে রেচন তন্ত্র বলে।


৮) নেফ্রিডিয়া কাদের রেচন অঙ্গ?

উত্তর: কেঁচো, জোঁক, পেরিপেটাস এবং অ্যাম্ফিঅক্সাসের রেচন অঙ্গ হলো নেফ্রিডিয়া।


৯) রেচন পদার্থ কাকে বলে? (What is excretory products?)

উত্তর: জীবদেহের কোশে উৎপন্ন বিপাকজাত দূষিত পদার্থ গুলিকে রেচন পদার্থ বলে।


১০) উদ্ভিদ ও প্রাণীর রেচন পদার্থ গুলিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর রেচন পদার্থ গুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা, 1] নাইট্রোজেন বিহীন রেচন পদার্থ, 2] নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থ এবং 3] কার্বন যুক্ত রেচন পদার্থ।


১১) দুটি কার্বন যুক্ত রেচন পদার্থের উদাহরণ দাও।

উত্তর: দুটি কার্বন যুক্ত রেচন পদার্থ হলো, উদ্ভিদের ট্যানিন এবং প্রাণীদের কার্বন ডাই অক্সাইড।


১২) রেচনের প্রধান উদ্দেশ্য কী?

উত্তর: জীব দেহের কলা কোশে উৎপন্ন বিপাকজাত দূষিত পদার্থ গুলিকে কোশ থেকে অপসারিত করা এবং প্রোটোপ্লাজমের জীবজ ক্রিয়া গুলিকে স্বাভাবিক রাখা হলো রেচনের প্রধান উদ্দেশ্য।


১৩) গঁদ বা গাম এর অর্থকরী গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: গঁদ বা গাম বিভিন্ন শিল্পে বিশেষ করে কাষ্ঠ শিল্প এবং বই বাঁধাই শিল্পে আঠা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


১৪) রজন বা রেজিন কয় প্রকারের এবং কী কী?

উত্তর: রজন বা রেজিন তিন প্রকারের হয়, যথা, 1] কঠিন রজন, 2] ওলিও রজন এবং 3] গঁদ রজন।


১৫) রজন এর অর্থকরী গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: রজন বা রেজিন গালা, টারপেনটাইন, ভ্যানিস শিল্পে অর্থাৎ কাঠ রঙ করতে, সাবান ও ফিনাইল প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়।


১৬) সাদা জলের মতো তরুক্ষীর কোথায় দেখা যায়?

উত্তর: সাদা জলের মতো তরুক্ষীর কলা, তামাক প্রভৃতি গাছে দেখা যায়।


১৭) কোন গাছের তরুক্ষীর থেকে বাণিজ্যিক রবার প্রস্তুত হয়?

উত্তর: হিভিয়া ব্রাসিলিয়েন্সিস (Hevea brasiliensis ) নামের প্যারা রবার গাছের তরুক্ষীর থেকে বাণিজ্যিক রবার প্রস্তুত হয়।


১৮) কুইনাইন কোথায় পাওয়া যায়?

উত্তর: সিঙ্কোনা গাছের বাকল থেকে কুইনাইন পাওয়া যায়।


১৯) নিকোটিন কোথায় পাওয়া যায়?

উত্তর: তামাক গাছের পাতায় নিকোটিন পাওয়া যায়।


২০) ক্যাফিন কোথায় পাওয়া যায়?

উত্তর: কফি গাছের বীজ এ ক্যাফিন পাওয়া যায়।


২১) ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরিতে কোন উপক্ষার ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরিতে কুইনাইন ব্যবহৃত হয়।


২২) উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ তৈরিতে কোন উপক্ষার ব্যবহৃত হয়?

উত্তর: উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ তৈরিতে রেসারপিন ব্যবহৃত হয়।


২৩) স্ট্রিকনিন কোথায় পাওয়া যায়?

উত্তর: নাক্সভোমিকা বা কুঁচেলা গাছের বীজ এ স্ট্রিকনিন পাওয়া যায়।


২৪) স্ট্রিকনিন এর অর্থকরী গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: পেটের পীড়ার ওষুধ তৈরিতে স্ট্রিকনিন ব্যবহৃত হয়।


২৫) মরফিন এর ব্যবহার লেখো।

উত্তর: ব্যাথা বেদনার উপশমকারী এবং গাঢ় নিদ্রার ওষুধ তৈরিতে মরফিন ব্যবহৃত হয়।


২৬) মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গের নাম কী?

উত্তর: মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গের নাম হলো বৃক্ক বা কিডনি।


২৭) মানুষের বৃক্কের ওজন কত?

উত্তর: মানুষের বৃক্কের ওজন প্রায় 125-170 gm. ।


২৮) হাইলাম কী?

উত্তর: বৃক্ক বা কিডনির পিঠের দিকটি উত্তল হয় এবং ভিতরের দিকটি অবতল হয়। বৃক্কের অবতল খাঁজটিকে বৃক্কীয় নাভী বা হাইলাম বলে।


২৯) বৃক্কীয় পিরামিড কাকে বলে?

উত্তর: বৃক্কের কর্টেক্স বিভিন্ন স্থানে মেডালার গভীরে প্রবেশ করে পিরামিড এর মতো গঠন তৈরি করে, এগুলিকে বৃক্কীয় পিরামিড বলে।


৩০) বৃক্কের গঠনগত এবং কার্যগত একক কী?

উত্তর: বৃক্কের গঠনগত এবং কার্যগত একক হলো নেফ্রন।


৩১) নেফ্রন কোন কোন অংশ নিয়ে গঠিত?

উত্তর: নেফ্রন তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যেগুলি হলো, 1] ম্যালপিজিয়ান করপাসল, 2] বৃক্কীয় নালিকা এবং 3] সংগ্রাহী নালিকা।


৩২) বৃক্কীয় নালিকার প্রধান কাজ কী?

উত্তর: পরিস্রুত তরলের প্রয়োজনীয় অংশের পুনঃশোষন হলো বৃক্কীয় নালিকার প্রধান কাজ।


৩৩) হেনলীর লুপ কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: বৃক্কীয় নালিকার মাঝের 'U' আকৃতি বিশিষ্ট অংশকে হেনলীর লুপ বলে।


৩৪) মুত্রের অজৈব পদার্থগুলি কী কী?

উত্তর: মুত্রের অজৈব পদার্থগুলি হলো, সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, সালফেট, ফসফেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রণ ইত্যাদি।


৩৫) মুত্রের জৈব পদার্থগুলি কী কী?

উত্তর: মুত্রের জৈব পদার্থগুলি হলো, ইউরিয়া, অ্যামোনিয়া, ইউরিক অ্যাসিড, ক্রিয়েটিনিন, কিটোন বডি, অ্যাসিটোন ইত্যাদি।


৩৬) ম্যালপিজিয়ান নালিকা এবং ম্যালপিজিয়ান করপাসল এর পার্থক্য (Difference between Malpighian Tubule and Malpighian Corpuscle)

ম্যালপিজিয়ান নালিকা: ম্যালপিজিয়ান নালিকা হলো পতঙ্গ শ্রেণীর প্রাণীদের রেচন অঙ্গ। এটি পতঙ্গ শ্রেণীর প্রাণীদের মধ্য ও পশ্চাদ পৌষ্টিক নালীর সংযোগস্থলে অবস্থিত।

ম্যালপিজিয়ান করপাসল: অপরদিকে, ম্যালপিজিয়ান করপাসল হলো মেরুদন্ডী প্রাণীদের বৃক্ক এর মধ্যে অবস্থিত নেফ্রন এর অংশ।


ম্যালপিজিয়ান নালিকা: ম্যালপিজিয়ান নালিকা হিমোলিম্ফ এ ভাসমান অবস্থায় থাকে।

ম্যালপিজিয়ান করপাসল: অপরদিকে, ম্যালপিজিয়ান করপাসল বৃক্ক এর কর্টেক্স অঞ্চলে থাকে।


ম্যালপিজিয়ান নালিকা: ম্যালপিজিয়ান নালিকা এর আকৃতি নলের মতো হয়।

ম্যালপিজিয়ান করপাসল: অপরদিকে, ম্যালপিজিয়ান করপাসল এর আকৃতি কণিকার মতো হয়।


ম্যালপিজিয়ান নালিকা: ম্যালপিজিয়ান নালিকা হিমোলিম্ফ থেকে রেচন পদার্থ শোষণ করে পৌষ্টিক নালীর গহ্বরে প্রেরণ করে।

ম্যালপিজিয়ান করপাসল: অপরদিকে, ম্যালপিজিয়ান করপাসল দূষিত রক্ত পরিস্রুত বা ফিল্টার করে অর্থাৎ রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ গুলিকে ছেঁকে নিয়ে বৃক্কীয় নালিকায় প্রেরণ করে।


৩৭) নেফ্রন কী? (What is Nephron?)

নেফ্রন হলো বৃক্ক বা কিডনি এর গঠনগত এবং কার্যগত একক।


৩৮) ম্যালপিজিয়ান করপাসল কী? (What is Malpighian Corpuscle?)

ম্যালপিজিয়ান করপাসল হলো বৃক্ক এর কর্টেক্স অঞ্চলে অবস্থিত ফানেল আকৃতির একটি অংশ।


৩৯) ব্যাওম্যান এর ক্যাপসুল কী? (What is Bowman's capsule?)

উত্তর: গ্লোমেরিউলাস কে আবৃত করে থাকা আবরণ কে ব্যাওম্যান ক্যাপসুল বলে।


৪০) অন্তর্মুখী ধমনিকা কাকে বলে?

উত্তর: গ্লোমেরিউলাস অভিমুখী রেনাল ধমনীর শাখাটিকে অন্তর্মুখী ধমনিকা বলে।


৪১) বহির্মুখী ধমনিকা কাকে বলে?

উত্তর: গ্লোমেরিউলাস থেকে বহির্মুখী বা দূরগামী উপধমনীর শাখাটিকে বহির্মুখী ধমনিকা বলে।


৪২) হেনলীর লুপ কাকে বলে? (What is Henles' loop?)

উত্তর: বৃক্কীয় নালিকার মাঝের 'U' আকৃতির অংশকে হেনলীর লুপ বলে।


৪৩) বৃক্কীয় নালিকার প্রধান কাজ কী?

উত্তর: পরিস্রুত তরলের প্রয়োজনীয় অংশের পুনঃশোষন হলো বৃক্কীয় নালিকার প্রধান কাজ।


৪৪) মানুষের বৃক্ক বা কিডনিতে কতগুলি নেফ্রন থাকে?

উত্তর: প্রতিটি মানুষের বৃক্ক বা কিডনিতে প্রায় দশ লক্ষ নেফ্রন থাকে।


৪৫) উদ্ভিদ ও প্রাণীর রেচন ক্রিয়ার পার্থক্য

১) উদ্ভিদের রেচন: রেচন পদার্থ নিষ্কাশন এর জন্য উদ্ভিদ দেহে নির্দিষ্ট কোনো অঙ্গ থাকে না। পত্রমোচন, বাকল মোচন, গঁদ নিঃসরণ এর মাধ্যমে উদ্ভিদ রেচন পদার্থ, উদ্ভিদ দেহ থেকে ত্যাগ করে।

১) প্রাণীর রেচন: প্রাণীর দেহে রেচন পদার্থ নিষ্কাশন এর জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ এবং তন্ত্র থাকে।


২) উদ্ভিদের রেচন: অধিকাংশ উদ্ভিদ তাদের রেচন পদার্থ গুলি অদ্রাব্য কেলাস বা কোলয়েড রূপে দেহের কলা-কোশে সঞ্চয় করে রাখে।

২) প্রাণীর রেচন: প্রাণীরা তাদের রেচন পদার্থ বেশি সময়ের জন্য দেহে সঞ্চিত রাখতে পারে না। প্রাণীরা তাদের রেচন পদার্থ এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে নির্গত করে। (কয়েকটি সন্ধিপদ এবং সরিসৃপ প্রাণী তাদের রেচন পদার্থ সাময়িক ভাবে বহিঃকঙ্কালে সঞ্চয় করে রাখে)।


৩) উদ্ভিদের রেচন: উদ্ভিদ তাদের রেচন পদার্থ গুলি বিভিন্ন উপচিতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহার করে। উদ্ভিদের রেচন পদার্থ গুলির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি।

৩) প্রাণীর রেচন: প্রাণীরা তাদের রেচন পদার্থ পুনরায় ব্যবহার করতে পারে না। প্রাণীদের রেচন পদার্থের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কম।


 ৪) উদ্ভিদের রেচন: উদ্ভিদ দেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার হার কম হওয়ার জন্য এদের দেহে উৎপন্ন রেচন পদার্থের পরিমাণ খুব কম হয়। উদ্ভিদের দেহে নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ কম সৃষ্টি হয়।

৪) প্রাণীর রেচন: প্রাণীর দেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার হার বেশি হয়। এর ফলে প্রাণীদের দেহে উৎপন্ন রেচন পদার্থের পরিমাণ বেশি হয়। প্রাণী দেহে নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ তুলনামূলকভাবে বেশি উৎপন্ন হয়।


৫) উদ্ভিদের রেচন: উদ্ভিদ এর রেচন পদার্থ কম ক্ষতিকর। উদ্ভিদের রেচন পদার্থ, উদ্ভিদ দেহ থেকে দ্রুত অপসারিত না হলেও তেমন কোনো ক্ষতি হয় না।

৫) প্রাণীর রেচন: প্রাণীর রেচন পদার্থ বেশি ক্ষতিকর হয়। প্রাণীর রেচন পদার্থ, প্রাণীদেহ থেকে দ্রুত অপসারিত না হলে কোশের বিপাকীয় ক্রিয়ার হার কমে যেতে পারে, এমনকি কোশের মৃত্যুও ঘটতে পারে।


৪৬) উদ্ভিদের রেচনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of plant excretion)

১) উদ্ভিদের রেচন পদার্থ গুলি প্রাণীদের তুলনায় কম জটিল এবং কম ক্ষতিকারক হয়।

২) উদ্ভিদের দেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার হার কম হওয়ায় এদের দেহে রেচন পদার্থ কম পরিমাণে উৎপন্ন হয়।

৩) উদ্ভিদ দেহে উৎপন্ন রেচন পদার্থ গুলি অধিকাংশই উপচিতি বিপাক এর মাধ্যমে বিভিন্ন কোশীয় দ্রব্যে সংশ্লেষিত হয়।

৪) উদ্ভিদের রেচন পদার্থ গুলির বেশিরভাগই কোষে কেলাস বা কোলয়েড হিসেবে সঞ্চিত থাকে।

৫) উদ্ভিদ দেহে কোন নির্দিষ্ট রেচন অঙ্গ বা তন্ত্র না থাকায় প্রাণীদের মতো উদ্ভিদরা তাদের রেচন পদার্থ দেহ থেকে নির্গত হতে পারে না।


৪৭) উদ্ভিদের রেচন পদার্থ ত্যাগ এর পদ্ধতি (Means of Removal of Excretory products in Plants)

কোনো কোনো উদ্ভিদ কয়েকটি বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের রেচন পদার্থ দেহ থেকে ত্যাগ করে। যেগুলি হলো —

১) পত্রমোচন :

পর্ণমোচী উদ্ভিদ যেমন, শিমুল, শিরীষ, আমড়া, অশ্বত্থ ইত্যাদি উদ্ভিদ বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে পত্র মোচন করে পাতায় সঞ্চিত অবস্থায় থাকা রেচন পদার্থ ত্যাগ করে। বহুবর্ষজীবী চিরহরিৎ উদ্ভিদরা সারা বছর ধরে অল্পবিস্তর পাতা ঝরিয়ে রেচন পদার্থ ত্যাগ করে।

২) বাকল মোচন:

কোনো কোনো উদ্ভিদ যেমন, অর্জুন, পেয়ারা ইত্যাদি উদ্ভিদ বাকল বা ছাল মোচন এর মাধ্যমে ত্বকে সঞ্চিত অবস্থায় থাকা রেচন পদার্থ ত্যাগ করে।

৩) ফল মোচন:

লেবু, তেতুল, আপেল ইত্যাদি ফলের ত্বকে বিভিন্ন জৈব অ্যাসিড যেমন, সাইট্রিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড রেচন পদার্থ হিসেবে সঞ্চিত থাকে। এই সমস্ত উদ্ভিদ পরিণত ফল মোচন করে দেহ থেকে রেচন পদার্থ অপসারণ করে।


৪৮) প্রাণীর রেচনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of animals excretion)

প্রাণীদেহে অপচিতি বিপাক এর ফলে অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ এর সৃষ্টি হয়। এগুলি সাধারণত প্রাণীদের মূত্র এবং ঘাম এর সাহায্যে দেহ থেকে নির্গত হয়। এছাড়াও কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কিটোন বডি, বিলিরুবিন, বিলিভার্ডিন প্রভৃতি রেচন পদার্থ রুপে প্রাণী দেহে উৎপন্ন হয় এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় ওইসব রেচন পদার্থ গুলি প্রাণীর দেহ থেকে নির্গত হয়ে যায়।

প্রাণীর রেচন এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল —

১) প্রাণীদের রেচন পদার্থ তুলনামূলকভাবে বেশি জটিল হয় এবং বেশি ক্ষতিকারক হয়।

২) প্রাণীদেহে প্রোটিন জাতীয় পদার্থের বিপাক বেশি হওয়ায় নাইট্রোজেন ঘটিত রেচন পদার্থ বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়।

৩) বেশিরভাগ প্রাণীদেহে রেচন অঙ্গ এবং তন্ত্র সৃষ্টি হওয়ার জন্য প্রাণীরা রেচন পদার্থ গুলিকে দেহ থেকে বার করে দেয়।

৪) বিশেষ কয়েকটি প্রাণী ছাড়া প্রাণীদেহে রেচন পদার্থ সঞ্চিত থাকে না।

৫) প্রাণীদের রেচন পদার্থ পুনরায় ব্যবহৃত হয় না।


৪৯) রজন কয় প্রকারের এবং কি কি?

উত্তর: রজন তিন প্রকারের যথা, কঠিন রজন, ওলিও রজন এবং গঁদ রজন।


৫০) কোন গাছের তরুক্ষীর থেকে বাণিজ্যিক রবার প্রস্তুত হয়?

উত্তর: Hevea brasiliensis নামের প্যারা রবার গাছের তরুক্ষীর থেকে বাণিজ্যিক রবার প্রস্তুত হয়।


৫১) উদ্ভিদের একটি নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থের নাম লেখ যা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

উত্তর: রেসারপিন, এটি সর্পগন্ধা গাছের মূল থেকে পাওয়া যায় একটি নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থ, এটি উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।


৫২) রজন বা রেজিন এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: গালা, টারপেনটাইন কাঠে রং করতে বা পালিশ করতে ব্যবহৃত হয়। ধুনা, পূজা পার্বণ এ ব্যবহৃত হয়। হিং, মিষ্টান্ন, পায়েস তৈরিতে ও মশলা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।


৫৩) উদ্ভিদের একটি নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থের নাম লেখ যা ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

উত্তর: কুইনাইন, এটি সিঙ্কোনা গাছের বাকল থেকে পাওয়া যায় একটি নাইট্রোজেন যুক্ত রেচন পদার্থ, এটি ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।


৫৪) উদ্ভিদ দেহ থেকে কীভাবে তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স এর নিঃসরণ ঘটে?

উত্তর: প্রাকৃতিক ভাবে বা আঘাতজনিত কারণে উদ্ভিদের কোনো অঙ্গ বিচ্ছিন্ন হলে সেই অংশ থেকে তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স এর নিঃসরণ ঘটে।


৫৫) সাদা জলের মতো তরুক্ষীর কোন উদ্ভিদে দেখতে পাওয়া যায়?

উত্তর: সাদা জলের মতো তরুক্ষীর কলা, তামাক উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়।


৫৬) তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স উদ্ভিদ দেহের কোন অংশে সঞ্চিত থাকে?

উত্তর: তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স উদ্ভিদের দীর্ঘ তরুক্ষীর কোষ এবং তরুক্ষীর নালীতে সঞ্চিত থাকে।


৫৭) পেঁপে গাছের তরুক্ষীর এ কোন উৎসেচক থাকে?

উত্তর: পেঁপে গাছের তরুক্ষীর এ প্যাপাইন (Papine) নামের উৎসেচক থাকে।


৫৮) একটি রজন বা রেজিনের নাম লেখো যা বিভিন্ন পূজা-পার্বণে ব্যবহৃত হয়।

উত্তর: ধুনা, বিভিন্ন পূজা-পার্বণে ব্যবহৃত হয়। এটি এক প্রকারের রজন বা রেজিন যা শাল গাছের বাকল এ থাকে।


😊 Bigyanbook এর সমস্ত নতুন পোস্টের আপডেট পেয়ে যান সরাসরি আপনার ইমেইলের ইনবক্স এ। নিচে আপনার ইমেইল দিয়ে ফ্রিতে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। 

😊 এই ওয়েবসাইট টিকে দ্রুত খুঁজে পাওয়ার জন্য এটিকে আপনার ব্রাউজারে বুকমার্ক হিসেবে অ্যাড করুন। 

😊 এছাড়াও আপনি লাইক করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ। নিচে সোশ্যাল প্লাগিন অপশনে ফেসবুক লেখাটিতে ক্লিক করে আপনি আমাদের ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক, ফলো করতে পারেন। এছাড়াও আপনি লাইক করতে পারেন এবং সাবস্ক্রাইব করতে পারেন আমাদের টুইটার হ্যান্ডেল এবং ইউটিউব চ্যানেল।

😊 পড়তে থাকুন বিজ্ঞান এর সমস্ত বিষয় সম্পূর্ণ বাংলায়, বিজ্ঞানবুক -এ।

😊 পড়তে থাকুন বিজ্ঞানবুক।

😊 ধন্যবাদ ।।

বিজ্ঞানবুক

লেখাটি কেমন কমেন্ট করে জানান। শেয়ার করুন এই পেজটি। পড়ুন অন্যান্য পোস্টগুলিও। youtube facebook

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন