
অণুবিস্তারণের গুরুত্ব বা মাইক্রোপ্রোপাগেশনের গুরুত্ব
- কিছু কিছু উদ্ভিদ যেমন - লেবু, কফি এদের ক্ষেত্রে অণুবিস্তারের সাহায্যে বীজের সুপ্ত দশা কাটিয়ে, চাষের সময়কাল কমিয়ে, ফলন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
- যে সমস্ত উদ্ভিদের বীজের অপরিণত অবস্থায় ভ্রুণের মৃত্যু হয়, সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতির মাধ্যমে কৃত্রিম বীজ সৃষ্টি করে বংশবৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব হয়েছে।
- কৃষিজ সংকর উদ্ভিদের চারাগাছের মৃত্যু ঘটলে, অণুবিস্তারের মাধ্যমে সতেজ চারাগাছ তৈরি করে চাষ করা সম্ভব হয়েছে।
- অণুবিস্তারণের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধী শস্য সৃষ্টি করা গেছে। (উদাহরণ: আলুর পত্র আবরণ রোগ - Potato leaf roll virus - PLRV)
- বাঁধাকপি, ফুলকপি, ভুট্টা, পেঁয়াজ প্রভৃতি উদ্ভিদে পুংবন্ধ্যাত্ব উদ্ভিদ অণুবিস্তার বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতির দ্বারা তৈরী করে স্বনিষেক রোধের দ্বারা উদ্ভিদের গুণগত মান সঠিক রাখা গেছে।
- অণুবিস্তার পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষি উদ্ভিদের আদি প্রকরণ গুলি সংরক্ষণ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে সংকরায়ণ ঘটানো সহজসাধ্য হয়।
অণুবিস্তারণের প্রয়োগ
- অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতির মাধ্যমে অসংখ্য অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ প্রজাতির রোগ প্রতিরোধক গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে শস্য ক্ষেতে ভাইরাস, মাইক্রোপ্লাজমা, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতির সংক্রমণ এর থেকে সৃষ্ট ক্ষতির হাত থেকে অব্যহতি পাওয়া যায়।
- অণুবিস্তারণ পদ্ধতিতে সৃষ্ট ক্ষুদ্র উদ্ভিদ (plantlet) মাতৃ উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণে সাহায্য করে।
- বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যেসব উদ্ভিদের জনন ধীর গতিতে ঘটে, সেক্ষেত্রে অণুবিস্তারণ পদ্ধতির মাধ্যমে সেইসব উদ্ভিদের জনন দ্রুতহারে ঘটানো সম্ভব।
- অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতির প্রয়োগ করে বিভিন্ন ফসলি উদ্ভিদের ফলন বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব হয়েছে।
- এই পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটিয়ে বিভিন্ন মূল্যবান কাষ্ঠল উদ্ভিদের (যেমন — শাল, সেগুন, ইউক্যালিপটাস প্রভৃতি) বংশবিস্তার দ্রুততর করা সম্ভব হয়েছে।
- অণুবিস্তারের মাধ্যমে সৃষ্ট উদ্ভিদ সুস্থ সবল, সতেজ ও গুণসম্পন্ন হয়।
- অধিকমাত্রায় সঞ্চয় এবং সংরক্ষণের মাধ্যমে কৃষিবিদ্যা এবং উদ্যানবিদ্যার সঠিক মান ও ধারা বজায় রাখতে অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনে সক্ষম।
অণুবিস্তারণ কাকে বলে ? বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন কাকে বলে ?
উদ্ভিদ কলা পালনের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে উদ্ভিদের অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতিকে অণুবিস্তার বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন বলে।
অণুবিস্তারণের দশা বা মাইক্রোপ্রোপাগেশনের দশা
- উপযুক্ত উদ্ভিদ অংশ এর নির্বাচন করা এবং তাদের পোষন করা।
- কান্ডের সংখ্যা বাড়ানো।
- তৈরি করা মুকুলে মূল সৃষ্টি করা।
- পূর্ণতা প্রাপ্ত উদ্ভিদ কে প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থানান্তরিত করা।